Menu |||

কিডনী রোগ আছে কিনা যে লক্ষণ গুলো থেকে বুঝতে পারবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক : কিডনী রোগের প্রাদুর্ভাব আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। সমগ্র বিশ্বের সাথে সাথে বাংলাদেশেও এখন কিডনী রোগ পরিস্থিতি ভয়াবহ। লক্ষণের দুর্বোধ্যতার জন্য ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছেন এমন অনেকেই জানেন না যে তার এই রোগটি আছে। ক্রনিক কিডনি রোগ (CKD) অনেক বছর পরে কিডনি ফেইলিউর সৃষ্টি করে। CKD আছে এমন অনেকেরই সারা জীবনে কিডনি ফেইলিউর হয়না। ষ্টেজ ৩ CKD আছে এমন ৮০% লোকের কিডনি অকেজো হয়না। কিডনি রোগের যেকোন ষ্টেজের জন্যই কিডনি রোগ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনই হচ্ছে এই রোগ নিরাময়ের মূল শক্তি। কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী নিরাময়ের ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়। আপনার অথবা আপনার পরিচিত কারো যদি কিডনি রোগের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হোন। কারণ কিডনি রোগের উপসর্গ গুলোর সাথে অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপসর্গের মিল আছে। আসুন জেনে নেই কিডনি রোগের উপসর্গ গুলো সম্বন্ধে।

১। এনার্জি কমে যাওয়া, অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা অথবা মনোযোগের সমস্যা হওয়া

কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মক ভাবে কমে যায় তখন রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, আর তা হচ্ছে এনেমিয়া। রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা অবসাদ গ্রস্থতার সমস্যা হতে পারে।

২। ঘুমের সমস্যা হওয়া

যখন কিডনি রক্ত পরিশোধন করতে অপারগ হয় তখন রক্তের টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হতে পারেনা বলে রক্তেই থেকে যায়। যার কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। অবেসিটি বা স্থূলতার সাথে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের যোগসূত্র আছে। এবং নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের একটি সাধারণ উপসর্গ।

৩। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও ফেটে যাওয়া

সুস্থ কিডনি অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কাজ করে থাকে। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করে দেয়, লাল রক্ত কণিকা তৈরি করে, হাড়কে শক্তিশালী করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য ও হতে পারে যা অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা।

৪। ঘন ঘন প্রস্রাব করা

যদি আপনার প্রায়ই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হয় বিশেষ করে রাতের বেলায় তাহলে এটা কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনির ছাঁকনি গুলো নষ্ট হয়ে যায় তখন প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি পায়। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ইউরিন ইনফেকশনের ও লক্ষণ হতে পারে, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লেন্ড বড় হয়ে গেলেও এই উপসর্গ দেখা দেয়।

৫। প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে

সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড সেল গুলোকে শরীরের ভিতরে রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বাহির করে দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন ব্লাড সেল বাহির হতে শুরু করে। প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার এই লক্ষণটির কিডনি রোগের সাথে সাথে টিউমার, কিডনি পাথর বা ইনফেকশনেরও ইঙ্গিত হতে পারে।

৬। প্রস্রাবে বেশি ফেনা হলে

প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন যাচ্ছে। ডিমের সাদা অংশ ফাটানো হলে যেমন ফেনা বা বাবেল হয় প্রস্রাবের এই বুদবুদ ও ঠিক সেই রকম। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে গেলে প্রোটিন লিক হয়ে প্রস্রাবের সাথে বাহির হয় বলে প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেয়।

৭। চোখের চারপাশে ফুলে গেলে

যখন কিডনি অনেক বেশি লিক করে তখন প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রস্রাবের সাথে বাহির হয়ে যায় বলে চোখের চারপাশে ফুলে যায়।

৮। পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে গেলে

কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে পা এবং গোড়ালি ফুলে যায়। পায়ের নীচের অংশ ফুলে যাওয়া হার্ট, লিভার এবং পায়ের শিরার দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার লক্ষণ ও হতে পারে।

৯। ক্ষুধা কমে গেলে

এটা খুবই সাধারণ সমস্যা কিন্তু শরীরে টক্সিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ফল স্বরূপ ক্ষুধা কমে যায়।

১০। মাংসপেশীতে খিঁচুনি হলে

কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা এবং মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা কমে গেলেও মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা দেয়।

১১। সবসময় শীত বোধ হওয়া

কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।

১২। ত্বকে র‍্যাশ হওয়া

কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র‍্যাশ তৈরি করতে পারে।

symtom of kidny disease১৩। বমি বা বমি বমি ভাব

রক্তে বর্জ্যনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

১৪। ছোটো ছোটো শ্বাস

কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।

১৫। পেছনে ব্যথা

কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

যদি উপরোক্ত উপসর্গ গুলো দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে সিমপল ইউরিন টেস্ট (ACR) এবং ব্লাড টেস্ট (eGFR) করিয়ে আপনার কিডনির কোন সমস্যা আছে কিনা নিশ্চিত হোন।

আসুন তাহলে আমরা সংক্ষেপে জেনে নেই কিভাবে আমরা ভয়াবহ কিডনী বিকল থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি এবং আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনীকে সুস্থ রাখতে পারি।

এই আটটি পদ্ধতি হল-

১. কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা
২. উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা
৩. সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা
৪. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
৬. ধূমপান থেকে বিরত থাকা
৭. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন না করা এবং
৮. নিয়মিত কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা

সমসাময়িক সময়ে কিডনী রোগ প্রতিরোধে যে ৮টি স্বর্ণালি সোপানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে খানিকটা আলোকপাত করি ।

কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা

কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম কিডনী রোগ প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে, কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং রক্তনালী সচল রাখে। সমীক্ষায় দেখা গেছে শুধু নিয়মিত হাঁটার কারণে গড় আয়ু ১৩ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস কিডনী বিকলের প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত। এ দুটি রোগ শুধু কিডনী বিকলই করে না হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক, অন্ধত্ববরণসহ অসংখ্য রোগের জন্ম দেয়। কাজেই এদের হাত থেকে বাঁচতে হলে রক্ত চাপ এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যেন তা ১৩০/৮০ নিচে থাকে। এবংব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে যাতে হিমগ্লোবিন HbA1C লেভেল ৭ এর নিচে থাকে।

সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে আমাদের দেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ ভাগ লোকেরই উচ্চ রক্তচাপ আছে। কিন্তু শতকরা ৫০ভাগ এর অধিক লোকই জানেন না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। কারণ এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তাই সুপ্ত রক্তচাপ নির্ণয়ের জন্য বছরে ৩/৪ বার রক্তচাপ মাপিয়ে নেয়া উচিত।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

পরিমিত সুষম খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। মনে রাখতে হবে যে, অতি ভোজন ও অতি ওজন স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। খাবারের সাথে আলগা লবণ পরিহার করতে হবে। অতি মসলাযুক্ত, বেশি ভাজা পোড়া খাবার, অতিরিক্ত ঝাল এবং প্রাণিজ তেল যেমন গরু খাসির চর্বি, ঘি, মাখন নিয়ন্ত্রণ করে খেতে হবে। শুধু পরিমাণে বেশি ও দামি খাবার খেলেই সুখাদ্য হয় না। খাবারের মধ্যে ৫টি উপাদান আছে কি না তা সবসময়ই খেয়াল রাখতে হবে। যেমন শর্করা জাতীয়- ভাত, রুটি, পিঠা। আমিষ জাতীয়- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল। স্নেহ জাতীয়- সয়াবিন, সরিষার তেল, সানফ্লাওয়ার।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

পানির অপর নাম জীবন। কিডনী সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন দেড় থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। তবে যাদের কিডনীতে পাথর আছে যাদের প্রশ্রাবে ঘন ঘন ইনফেকশন হয়, যারা রোদে এবং কলকারখানায় কাজ করে তাদের পানি আরও বেশি পরিমাণ খেতে হবে, যাতে প্রশ্র্রাবের রং পানির মত থাকে অথবা এক থেকে দেড় লিটার প্রশ্রাব হয়। তবে যাদের শরীরের অতিরিক্ত পানি জমা আছে তাদের ডাক্তারের নির্দেশ মতো পানি পান করতে হবে।

ধূমপান থেকে বিরত থাকা

একটি জনপ্রিয় প্রবাদ বাক্য হচ্ছে – ‘ধূমপানে বিষপান’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি বছর শুধু ধূমপানের জন্য সারা বিশ্বে মৃত্যু হয় ৬৬ লক্ষ মানুষের। ধূমপানের ফলে কিডনী বিকল হয়, কিডনীতে ক্যান্সার হয় , কিডনী ও মূত্রণালিতে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এছাড়া ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সার, মুখ ও খাদ্যনালির ক্যান্সার, হৃদরোগ, ষ্ট্রোকসহ অসংখ্য মরণব্যধির কারণ। কাজেই এসব রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে ধূমপান পরিহার করতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন না করা

দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন ব্যথা-বেদনার ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কিডনী বিকল হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ১০ থেকে ১৫ ভাগ কিডনী বিকল হয় ঔষধ খাওয়ার কারণে। এছাড়াও এন্টিবায়োটিকসহ অনেক ঔষধ কিডনীর মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এই ক্ষতির মাত্রা ঔষুধের মাত্রা ও কতোদিন খাচ্ছে তার ওপর অনেক সময় নির্ভর করে। আবার অনেক সময় এলার্জির কারণে স্বল্প মাত্রার ঔষধেও কিডনী বিকলের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কাজেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।

নিয়মিত কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা

কিডনী রোগ কে বলা হয় নীরব ঘাতক। কারণ ৭০ থেকে ৮০ভাগ কিডনী নষ্ট হওয়ার আগে অনেকসময় কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। অথচ সামান্য রক্ত ও প্রশ্রাব পরীক্ষা করেই এ রোগ সুপ্ত অবস্থায় দেহে আছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়। কাজেই যাদের মধ্যে কিডনী রোগের ঝুঁকি বেশি- যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, যাদের মুখ ও শরীর ফুলে গেছে, যাদের কিডনীতে পাথর আছে, যাদের প্রশ্রাবে বাঁধা জনিত রোগ আছে, প্রশ্রাবে যাদের ইনফেকশনের ইতিহাস আছে, যাদের বংশে কিডনী রোগের ইতিহাস আছে, যাদের বয়স ৪০ এর উপরে তাদের বছরে দুই বার কিডনী পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।

স্বাস্থ্য একটি অমূল্য সম্পদ এই সম্পদ সংরক্ষণের জন্যে উপরে উল্লিখিত পরামর্শ সমূহ যদি জীবনের শুরু থেকেই মেনে চলা যায় তাহলে শুধু কিডনী নয় সকল অসংক্রামক ব্যাধি থেকেই নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। কাজেই আসুন সকলেই নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। এতে অর্থ ব্যয় হবে সামান্যই। তবে যে উপকার পাওয়া যাবে তা অমূল্য।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা, বসলেন ইউনূসের পাশের চেয়ারে
আজকের দিনটি গোটা জাতির জন্য আনন্দের: ফখরুল
তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী
কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে
সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে
মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার
কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
নতুন উপদেষ্টাদের নিয়ে জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখবো’
জীবিত স্বামীকে গণ–অভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্তরায়: সম্পাদক পরিষদ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা

» ভেঙে ফেলা হবে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক!

» জামায়াত ‘বাধ্য হয়ে’ পাকিস্তানের পক্ষে ছিল: শফিকুর

» এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা, বসলেন ইউনূসের পাশের চেয়ারে

» আজকের দিনটি গোটা জাতির জন্য আনন্দের: ফখরুল

» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

কিডনী রোগ আছে কিনা যে লক্ষণ গুলো থেকে বুঝতে পারবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক : কিডনী রোগের প্রাদুর্ভাব আজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। সমগ্র বিশ্বের সাথে সাথে বাংলাদেশেও এখন কিডনী রোগ পরিস্থিতি ভয়াবহ। লক্ষণের দুর্বোধ্যতার জন্য ক্রনিক কিডনি রোগে ভুগছেন এমন অনেকেই জানেন না যে তার এই রোগটি আছে। ক্রনিক কিডনি রোগ (CKD) অনেক বছর পরে কিডনি ফেইলিউর সৃষ্টি করে। CKD আছে এমন অনেকেরই সারা জীবনে কিডনি ফেইলিউর হয়না। ষ্টেজ ৩ CKD আছে এমন ৮০% লোকের কিডনি অকেজো হয়না। কিডনি রোগের যেকোন ষ্টেজের জন্যই কিডনি রোগ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনই হচ্ছে এই রোগ নিরাময়ের মূল শক্তি। কিডনি রোগের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকলে সেই অনুযায়ী নিরাময়ের ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়। আপনার অথবা আপনার পরিচিত কারো যদি কিডনি রোগের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট করিয়ে নিশ্চিত হোন। কারণ কিডনি রোগের উপসর্গ গুলোর সাথে অন্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপসর্গের মিল আছে। আসুন জেনে নেই কিডনি রোগের উপসর্গ গুলো সম্বন্ধে।

১। এনার্জি কমে যাওয়া, অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা অথবা মনোযোগের সমস্যা হওয়া

কিডনির কর্মক্ষমতা যখন মারাত্মক ভাবে কমে যায় তখন রক্তে অপদ্রব্য হিসেবে টক্সিন উৎপন্ন হয়। এর ফলে আপনি দুর্বল ও ক্লান্ত অনুভব করেন এবং কোন বিষয়ে মনোযোগ দেয়াটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আরেকটা জটিলতা দেখা দিতে পারে, আর তা হচ্ছে এনেমিয়া। রক্তস্বল্পতার কারণেও দুর্বলতা বা অবসাদ গ্রস্থতার সমস্যা হতে পারে।

২। ঘুমের সমস্যা হওয়া

যখন কিডনি রক্ত পরিশোধন করতে অপারগ হয় তখন রক্তের টক্সিন প্রস্রাবের মাধ্যমে বাহির হতে পারেনা বলে রক্তেই থেকে যায়। যার কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। অবেসিটি বা স্থূলতার সাথে ক্রনিক কিডনি ডিজিজের যোগসূত্র আছে। এবং নিদ্রাহীনতা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের একটি সাধারণ উপসর্গ।

৩। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া ও ফেটে যাওয়া

সুস্থ কিডনি অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কাজ করে থাকে। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ও অতিরিক্ত তরল বাহির করে দেয়, লাল রক্ত কণিকা তৈরি করে, হাড়কে শক্তিশালী করে এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করে। শুষ্ক ও ফেটে যাওয়া ত্বক খনিজ ও হাড়ের অসুখের জন্য ও হতে পারে যা অ্যাডভান্স কিডনি রোগের সহগামী হিসেবে থাকতে পারে যখন কিডনি রক্তের পুষ্টি উপাদান ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারেনা।

৪। ঘন ঘন প্রস্রাব করা

যদি আপনার প্রায়ই মূত্রত্যাগের প্রয়োজন হয় বিশেষ করে রাতের বেলায় তাহলে এটা কিডনি রোগের লক্ষণ। যখন কিডনির ছাঁকনি গুলো নষ্ট হয়ে যায় তখন প্রস্রাবের বেগ বৃদ্ধি পায়। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ ইউরিন ইনফেকশনের ও লক্ষণ হতে পারে, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্লেন্ড বড় হয়ে গেলেও এই উপসর্গ দেখা দেয়।

৫। প্রস্রাবের সাথে রক্ত গেলে

সুস্থ কিডনি সাধারণত ব্লাড সেল গুলোকে শরীরের ভিতরে রেখে রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ মূত্র হিসেবে বাহির করে দেয়। যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তখন ব্লাড সেল বাহির হতে শুরু করে। প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার এই লক্ষণটির কিডনি রোগের সাথে সাথে টিউমার, কিডনি পাথর বা ইনফেকশনেরও ইঙ্গিত হতে পারে।

৬। প্রস্রাবে বেশি ফেনা হলে

প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা দেখা দিলে বুঝতে হবে যে, প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন যাচ্ছে। ডিমের সাদা অংশ ফাটানো হলে যেমন ফেনা বা বাবেল হয় প্রস্রাবের এই বুদবুদ ও ঠিক সেই রকম। প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের উপস্থিতির জন্যই এমন হয়। কিডনির ফিল্টার ড্যামেজ হয়ে গেলে প্রোটিন লিক হয়ে প্রস্রাবের সাথে বাহির হয় বলে প্রস্রাবে ফেনা দেখা দেয়।

৭। চোখের চারপাশে ফুলে গেলে

যখন কিডনি অনেক বেশি লিক করে তখন প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন প্রস্রাবের সাথে বাহির হয়ে যায় বলে চোখের চারপাশে ফুলে যায়।

৮। পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে গেলে

কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় ফলে পা এবং গোড়ালি ফুলে যায়। পায়ের নীচের অংশ ফুলে যাওয়া হার্ট, লিভার এবং পায়ের শিরার দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার লক্ষণ ও হতে পারে।

৯। ক্ষুধা কমে গেলে

এটা খুবই সাধারণ সমস্যা কিন্তু শরীরে টক্সিনের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ফল স্বরূপ ক্ষুধা কমে যায়।

১০। মাংসপেশীতে খিঁচুনি হলে

কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতা এবং মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা কমে গেলেও মাংসপেশিতে খিল লাগার সমস্যা দেখা দেয়।

১১। সবসময় শীত বোধ হওয়া

কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।

১২। ত্বকে র‍্যাশ হওয়া

কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। এটি ত্বকে চুলকানি এবং র‍্যাশ তৈরি করতে পারে।

symtom of kidny disease১৩। বমি বা বমি বমি ভাব

রক্তে বর্জ্যনীয় পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।

১৪। ছোটো ছোটো শ্বাস

কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।

১৫। পেছনে ব্যথা

কিছু কিছু কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়। এটিও কিডনি রোগের একটি অন্যতম লক্ষণ।

যদি উপরোক্ত উপসর্গ গুলো দেখা যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে সিমপল ইউরিন টেস্ট (ACR) এবং ব্লাড টেস্ট (eGFR) করিয়ে আপনার কিডনির কোন সমস্যা আছে কিনা নিশ্চিত হোন।

আসুন তাহলে আমরা সংক্ষেপে জেনে নেই কিভাবে আমরা ভয়াবহ কিডনী বিকল থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি এবং আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনীকে সুস্থ রাখতে পারি।

এই আটটি পদ্ধতি হল-

১. কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা
২. উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা
৩. সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা
৪. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
৬. ধূমপান থেকে বিরত থাকা
৭. ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন না করা এবং
৮. নিয়মিত কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা

সমসাময়িক সময়ে কিডনী রোগ প্রতিরোধে যে ৮টি স্বর্ণালি সোপানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে খানিকটা আলোকপাত করি ।

কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম করা

কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়াম কিডনী রোগ প্রতিরোধ করে। পাশাপাশি ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে, কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং রক্তনালী সচল রাখে। সমীক্ষায় দেখা গেছে শুধু নিয়মিত হাঁটার কারণে গড় আয়ু ১৩ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস কিডনী বিকলের প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত। এ দুটি রোগ শুধু কিডনী বিকলই করে না হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক, অন্ধত্ববরণসহ অসংখ্য রোগের জন্ম দেয়। কাজেই এদের হাত থেকে বাঁচতে হলে রক্ত চাপ এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যেন তা ১৩০/৮০ নিচে থাকে। এবংব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে যাতে হিমগ্লোবিন HbA1C লেভেল ৭ এর নিচে থাকে।

সুপ্ত উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে আমাদের দেশের প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ ভাগ লোকেরই উচ্চ রক্তচাপ আছে। কিন্তু শতকরা ৫০ভাগ এর অধিক লোকই জানেন না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। কারণ এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তাই সুপ্ত রক্তচাপ নির্ণয়ের জন্য বছরে ৩/৪ বার রক্তচাপ মাপিয়ে নেয়া উচিত।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

পরিমিত সুষম খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য। মনে রাখতে হবে যে, অতি ভোজন ও অতি ওজন স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। খাবারের সাথে আলগা লবণ পরিহার করতে হবে। অতি মসলাযুক্ত, বেশি ভাজা পোড়া খাবার, অতিরিক্ত ঝাল এবং প্রাণিজ তেল যেমন গরু খাসির চর্বি, ঘি, মাখন নিয়ন্ত্রণ করে খেতে হবে। শুধু পরিমাণে বেশি ও দামি খাবার খেলেই সুখাদ্য হয় না। খাবারের মধ্যে ৫টি উপাদান আছে কি না তা সবসময়ই খেয়াল রাখতে হবে। যেমন শর্করা জাতীয়- ভাত, রুটি, পিঠা। আমিষ জাতীয়- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল। স্নেহ জাতীয়- সয়াবিন, সরিষার তেল, সানফ্লাওয়ার।

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা

পানির অপর নাম জীবন। কিডনী সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত। একজন বয়স্ক লোকের প্রতিদিন দেড় থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। তবে যাদের কিডনীতে পাথর আছে যাদের প্রশ্রাবে ঘন ঘন ইনফেকশন হয়, যারা রোদে এবং কলকারখানায় কাজ করে তাদের পানি আরও বেশি পরিমাণ খেতে হবে, যাতে প্রশ্র্রাবের রং পানির মত থাকে অথবা এক থেকে দেড় লিটার প্রশ্রাব হয়। তবে যাদের শরীরের অতিরিক্ত পানি জমা আছে তাদের ডাক্তারের নির্দেশ মতো পানি পান করতে হবে।

ধূমপান থেকে বিরত থাকা

একটি জনপ্রিয় প্রবাদ বাক্য হচ্ছে – ‘ধূমপানে বিষপান’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি বছর শুধু ধূমপানের জন্য সারা বিশ্বে মৃত্যু হয় ৬৬ লক্ষ মানুষের। ধূমপানের ফলে কিডনী বিকল হয়, কিডনীতে ক্যান্সার হয় , কিডনী ও মূত্রণালিতে ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। এছাড়া ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সার, মুখ ও খাদ্যনালির ক্যান্সার, হৃদরোগ, ষ্ট্রোকসহ অসংখ্য মরণব্যধির কারণ। কাজেই এসব রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে ধূমপান পরিহার করতে হবে।

ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন না করা

দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন ব্যথা-বেদনার ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে কিডনী বিকল হয়ে যেতে পারে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ১০ থেকে ১৫ ভাগ কিডনী বিকল হয় ঔষধ খাওয়ার কারণে। এছাড়াও এন্টিবায়োটিকসহ অনেক ঔষধ কিডনীর মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এই ক্ষতির মাত্রা ঔষুধের মাত্রা ও কতোদিন খাচ্ছে তার ওপর অনেক সময় নির্ভর করে। আবার অনেক সময় এলার্জির কারণে স্বল্প মাত্রার ঔষধেও কিডনী বিকলের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কাজেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ সেবন করা উচিত নয়।

নিয়মিত কিডনীর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা

কিডনী রোগ কে বলা হয় নীরব ঘাতক। কারণ ৭০ থেকে ৮০ভাগ কিডনী নষ্ট হওয়ার আগে অনেকসময় কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। অথচ সামান্য রক্ত ও প্রশ্রাব পরীক্ষা করেই এ রোগ সুপ্ত অবস্থায় দেহে আছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়। কাজেই যাদের মধ্যে কিডনী রোগের ঝুঁকি বেশি- যেমন যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, যাদের মুখ ও শরীর ফুলে গেছে, যাদের কিডনীতে পাথর আছে, যাদের প্রশ্রাবে বাঁধা জনিত রোগ আছে, প্রশ্রাবে যাদের ইনফেকশনের ইতিহাস আছে, যাদের বংশে কিডনী রোগের ইতিহাস আছে, যাদের বয়স ৪০ এর উপরে তাদের বছরে দুই বার কিডনী পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।

স্বাস্থ্য একটি অমূল্য সম্পদ এই সম্পদ সংরক্ষণের জন্যে উপরে উল্লিখিত পরামর্শ সমূহ যদি জীবনের শুরু থেকেই মেনে চলা যায় তাহলে শুধু কিডনী নয় সকল অসংক্রামক ব্যাধি থেকেই নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব। কাজেই আসুন সকলেই নিয়মগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। এতে অর্থ ব্যয় হবে সামান্যই। তবে যে উপকার পাওয়া যাবে তা অমূল্য।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা, বসলেন ইউনূসের পাশের চেয়ারে
আজকের দিনটি গোটা জাতির জন্য আনন্দের: ফখরুল
তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী
কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে
সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে
মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার
কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
নতুন উপদেষ্টাদের নিয়ে জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখবো’
জীবিত স্বামীকে গণ–অভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্তরায়: সম্পাদক পরিষদ


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Tue, 3 Dec.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।